ছায়ার উলটো দিকে

১.
আয়নার রেখা ক্রমশ ঢেউ জল
হাঁটু ডুবে যেতে শ্বাস বাড়াই
যা কিছু তোমার ছিলো এতোকাল
আজ তা পারার দখলে
থার্মোমিটারের দাগে দম মাপছি
এই জঙ্ঘার চাক ধ্বসে গেলো
এই তো ‘ইউ’ বাঁক ছাড়িয়ে কোমর
উচ্চতা উড়ছে নাব্য হচ্ছি যতো
নৌকো চলাচল করছে প্রসাদীয় পালে
আহা ছই ভয় নেই কোনও
গোলাপি লিপস্টিক ঠিক কিছু দ্বীপ
খুঁজে রমণের দাগ রেখে যাবে

২.
ইতালিয় সবুজ অলিভ লাল বোঁটা আর এলোভেরা
যত্নদানীতে চুপচাপ সেজেছে
বাথরুম হাওয়া মেলে পরিপাটি শানদার
তোমাকে কী বলি! রোদ্দুর বলি এলকোহল?
খোলা পিঠে জড়ুলের চেনা নিয়ে
হেঁটে যাওয়া বড্ড মুশকিল আজকাল
পা যেতে চাইবে মুড়ে থাকতে চাইবে তোমার চৌকাঠে
মনবাউলা মাটির হাঁড়িতে খুদভাঙা ফুটিয়ে রাখতে চাইবে




নিশ্চয় চুপ মেরে আছো মেঘ

১.
উনুন ও ভুট্টা থেকে ধোঁয়া উঠছে
পোড়ানোর আগে বা পরে লেবুর ছিলকা
ঠেস রেখে পড়ে ছিলো গরমের ভারে
বিটনুন বাটারি চমক হঠাৎ ছোঁয়ার মতো
আচমকা মৃত্যুকে মেনে নেয়
এসময় রাস্তারা হৈ-হুল্লোড়ের তাসাবাজি করে
ধুলো ওড়ায় রিক্সার চাকায় হ্যালো মাইক্রোটেস্টিং
ওয়ান টু থ্রি ফোর ছম্মা ছম্মা শিশে কি উম্র তোড় কর
ঘুরতে ঘুরতে বসতভিটার উঠোনে
ছাপ্পা মেরে মাটিলেপা গোবরের বাসগন্ধ মাখে

ওইদিকে হলুদপশারি
দোকানমাহাত্ম্য থেকে দূরে সরে এসো মন
এদিকে তাকাও পায়ের গোছ থেকে
সরসর সিন্থেটিক বেয়ে কলকার সাপ
উঠে গেছে যেন মই যেন ঘুড়ি লটকে আছে
সাধুর দেওয়ালে এক ছোবলে দোফালা জিভে
পুরে নেবে ভিজে কামিজ নোনতা পোস্টার

এরকম ফিল্মি ভিড়ে ছাদ চিলেকোঠা আলসের শীত
গোপনে বেলুন জমা করে
হাইড্রোজেন বুদবুদ গোল বা পানের মুখ বা লম্বাটে
আকাশি চর্বির কাছে ওড়াওড়ি মুলতবি রাখো
এ শরীর এ শহর ভাঁজে ভাঁজে মাংস ফেলেছে
সেঁকা তারে ঝুলছে তেত্রিশ কোটি অক্ষর
মন খারাপ কোরো না থুতনির ঝুলে কালো মেঘ
বৃষ্টি এখনই ঝাঁপাবে ধানের জখম মেপে নিয়ে
দু’-একটা থৈ থৈ অপেক্ষায় রাখো

২.
কলমের গায়ে হাত মেললে ছ্যাঁকা খাই
যেন কোনও যৌনকাজ অথবা লিঙ্গ
ছোঁয়ামাত্র সজীব হয়ে ওঠে
নিজেই খাড়া হওয়া কলম আঙুলের ওঠানাম চায়
কালির নরম বুটি তেমন সজাগ
জলদাগ প্রবাহ শামুকখোল ও নুনপাথর
এপাশ ওল্টায় ওপাশ ফিরতে ঠেসে দেয় গুনসুতো
মাথার ওপরে সিগালের চক্করযান কাম চিৎকার
পাঠকগণ মনে করুন পুরো একটা সমুদ্র অথবা জাহাজ
প্রথম শিকারনিয়ম প্রথম আগুন চকমকি ঠোকা
প্রথম ছাড়িয়ে নেওয়া হরিণের ধুকপুক ছাল
গুহাছবির সাদায় প্রথম রং ব্রোঞ্জ আর লোহার ব্যবহার
সভ্যতা রাজত্ব রথ যুদ্ধ প্রেমের দাসখত
লিখতে লিখতে ছুঁতে ছুঁতে সেলাই করতে করতে
আমেন আমেন অক্ষরবেশ্যা হয়ে গেছি




গল্প অথবা গ্রাম

১.
কাহনের শিশ রাখা নীচু আলপথ
দিগন্তের দিকে তার আশ্চর্য ভ্রমণ
শখের বাঁশি গলা ছেড়ে ডাকে ঘাসনাম
পারে তালপাতা ছেয়ে নেওয়া বসতের ঢল
খরগোশের গতিতে ছড়িছে নেশাগাছ
উদোম ও হাটখোলা দরজার আলোয় খাসিয়াশরীর
ওপাড়ের তিসিক্ষেত জলছড়া দিচ্ছে পাইপ
সরু ঘোলাজল ফিসফিস মাটি চিড়ে গোপন
শিকড়ের চেনা পেটে নাজায়েজ ঔলাদ পুঁতে গেছে

২.
শীতের প্রথম তাই কুয়াশার ঘটা
গাছে গাছে ঘোমটা টাঙানো
পথ চলে গেছে বাকি পথদের মুখ চিনে নিতে
একবার কেউ চলে গেলে আর ফেরে না মুখভারী জামাইয়ের মতো
বাড়া ভাত ঠান্ডা হয় পিঁপড়ে আসে মাছি বসে থমকে থমকে
শীতের কণার কাছে ডালের হিম বাটি তুলে ধরে

৩.
নতুন জন্ম এলে বলে দেবো এসো না আর
নতুন সবকিছু ভাল্লাগে না
বরং পুরোনো সেই মুখ বাসি ঠোঁট চুমু খাক
লালায় ছিটকোক পুঁটিমাছের রাত্রিকালীন আঁশটে
বিছানার ভাগাভাগি এধার ওধার হার ধরাধরি করে শুক
পুরোনো জন্মের থালায় বিষ ফেলে বাসন ধোব
সাবানের লেজ কেটে বুদবুদ মাটিতে গড়াবে