ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ

যুদ্ধ গুটিয়ে এল, সিসিফাস, নরমাংস চাই
প্রভাতে বোতল খুলি, ব্যাগাডুলি, দেহান্তের ছাই
নিয়ে বসে যাব সব। আর্তরব, আত্মীয়ের শোক
সমস্ত উজাড় হোক, চরিত্রের জোডিয়াক হোক।
বিশ্বাস পুড়লেই ছুঁড়ে ফেলবার তত্ত্ব খোলা
বেলা হল সিসিফাস, দীর্ঘশ্বাস কতদিন তোলা
আছে কুলুঙ্গিতে, তার নির্দিষ্ট জন্মতিথি নেই
কবিতা জাতক হলে অমরত্ব দেখো সে পাবেই
দীর্ঘ প্রবাসশেষে পথে এসে পথই উধাও
ক্ষমা করো সিসিফাস, আরেকটু নরমাংস দাও
তো আমি বৌদ্ধ হই, হিংসার মর্মমাত্র বুঝি,
সিগারেটমুগ্ধ তাকে প্রাত্যহিক ছ্যাঁকাটুকু পুঁজি
করে নিতে সত্যাসত্য রাজীও করাব একদিন।
যাবজ্জীবন হাড়ে বেড়ে যাওয়া শতাব্দের ঋণ,
সিসিফাস, আমরাই তোমার এই প্রহৃত সন্তান
অবিকল্প পুরোবাহু জুড়ে এক মোক্ষাতীত টান
বার বার বেঁচে ওঠা সহজ করেছে, তুমি খুশি?
এই শর্তে মরে যাও, আমরা তোমার হাড় চুষি।




দুর্বিনীত

(শ্বৈলেশ্বর ঘোষকে)

আগে তো বাঘ-ও পুষেছিলাম—হাসনাবাদী-গ্রামে,
এতদিন আগে তবু চিহ্নগুলি পেলাম কী ক’রে?
একাঙ্ক সূর্য সাজত যে কেউ, কারুর হাত ধরে
কে জানে এখনো চট-জাদুবুড়ী নামে কি না নামে?
একটি পদ্য তার চেঁচিয়ে পড়ার বিকিকিনি,
চতুর সন্ধ্যে এসে তথাগত দু-পেয়ে হওয়ার
তালে থাকে; তবে যাকে সেদিন এক কবিতাসওয়ার
মাঝমাঠে ছিঁড়ে এল—তাকে মূর্খ আজ-ও দ্যাখেনি।
থমথমের অন্তরে মুড়োচ্ছে শঙ্খের দেনা,
বাড়ীটি জড়িয়ে নানা তুল্য ধুয়ো, তক্ষশীলাঞ্চল-
পরাভূত, আছে থাক। ওদের আসা-ও যেন ছল,
এলে তো পুরোই আসে, আসে না তো আদৌ আসে না।
তোমার ঋতুর গন্ধে ডুবেছে সনেটশিশু, স্তন।
ঋতুরাও রাজরক্ত—জড়ত্বের বৈরাগ্যসাধন।




পরিবর্ত

১.
আমাকে কেন্দ্রে রেখে ঘুরেই চলেছে কনেদেখা আলো।
আলোগুলি উচ্ছন্নে যাবার, যেটুকু দুপুর মা-কে বেঁধে রাখতে পারে
আমাদের আড়াল থেকে—সেইটুকু অন্য হবার।
আমাদের সাদা দাগ প্রথম মায়েরই
চোখে পড়ে। সুসংবাদের দিন
মা-কেই প্রথম একা ফেলে আসতে হয়।

২.
পরবর্তী কোনকিছু লিখব বলে অপেক্ষা রাখিনি
চোখেমুখে। আঁতুরে দানোর মত ট্রেন ঢুকে গেলে
আচমনসর্বনাশ-ও হত, তবু এক জুলেখা আঁচল
বুকের তিলের থেকে একখণ্ড একর ফেলেছে।
শরীর-ও স্থানুর মত প্রিয় হয়ে উঠেছে দুপুরের।

৩.
এমনই লোকটা তার কী কী শেখা হল না জীবনে
তাই নিয়ে বিশ্রী করে সুদখাওয়া। সেচিত জমিন।
অথচ লালন-ও আছে ভঙ্গিমায়, এই ঠায়
আজ তাকে উল্টোপাল্টা বলেছিল, সেই রাগে
ঘনিষ্ঠ মুখোশ সে ছেড়ে রেখে গ্যাছে হাটে।
এমনই লোকটা তার
যুগসন্ধি জ্বর দিয়ে চিরে চিরে কুইনাইন কাটে।