শ্বেতপত্র

ছড়ানো মোহ
তিল তিল জীবনের অলিগলিতে
কেবলি লবণের টান, হাহাকার

ঋতু বদলিয়ে ঝুলে থাকা কাল
স্বাগত বাচন হারিয়ে ঘোর ছায়ায়
রঙের কাহিনি বেচার কারিগর ফেরে
চাতকের শ্বাসনালীর বীজ নিয়ে

এসো এসো আবাহনের বহু আগেই
দিনাবসানের সেচখালে হাজির
হাজার দ্বিধা ততধিক ব্যথা শোক নিয়ে
লহমা শিখরে মুখরতার যাচাই

তবু নীরব থাকার ব্রতে অটল
অতি ধীরে চোখ মেলি বা পা নামাই




এপিটাফ

চিতপাত শোয়া পুতুলের বিছানায়
খেলনা জীবনের পরশকাঠি রাখা
একে একে লোভ শাপ পরকীয়ার ঠেকা
টপকাতে গেলেই বিষম সুতোর টান

পুরিয়া বীজের মতো নরমরাখা যৌবন
পরিবার পুর নারী ও পরখ নগদে চালু
দেখা যায় মৃত পরিখায় চাঁদ আভা
হয়তো বা অসূয়া সুরার ক্লীব হাতছানি

কীরকম মূল হলে গাছ মহিরুহ হয়
জানার আগেই সেই কাঠবেড়ালি
ফলহীন পেয়ারার কচিপাতা চিবোয়
তবে কী বাড়ির চাবি প্রকৃত হারিয়েছে

নাকি নীরবতার দোহাই বাজনা ও সাজে
ক্রমশ ঝরে পড়ছে চেনা লোমগুলি
যার সাথে পুরানো ঘি ও ভালোলাগা
না পুড়েও ছাই ঘেঁটে বরফ খুঁজছে




শুশ্রূষা: বহির্বিভাগ

ঢিল আর সুতো বেঁধে বেঁধে
মনসাগাছ এখন মনগাছ

গ্রাম শহরের রূপসী, বধূ, প্রৌঢ়া
শহুরে শেয়ার খোয়ানো চাতক
সরকারি কেরানি, খুচরো দোকানি
মন দিয়ে মন সেবা করে

ক্রীড়নক পুরোহিত স্তোক বিলোয়
হবে, মনোবাঞ্ছা যা কিছু!

মনগাছ নাকি পুরোহিতকে শাসিয়েছে
মন মাতানো কাহিনি মণ মণ বাড়ে
সাথে প্রণামী, পালা এবং
রাতে সন্তানকামী নারীদের কেউ
সুফলা জমি মেলে ধরলে
মন মাতাতে মেলে সুফল রতি

জগদীশবাবুর গাছ কী দেখে—
বা জেনে বুঝে এসবে শ্বাস নেয়!

বেচারা পুরোহিতের কী পরহিত
ভর—মাঝে লোকেদের ভালো চায়

অটল মনগাছের কাঁটা ঢাকা দেহ
রোদ ঝড়-জলেও জ্বলজ্বল করে
লাল সুতো, চেলি ও মালায়

তার মন আর কেই বা বুঝতে চায়!




অনুষ্ঠানবাড়ি

ফুল মালা বেলুন খেলনায়
শিশুটি শিষ ছাড়িয়ে আকুল
ঢোল কলমির দলে ভেজা বাতাস
আর সোঁদা উপবনের বাচালতা
বেশ সহজেই রং মিলিয়ে খুশি
খুলে যায় করবী কোরক

প্রাণ, প্রাণের মাদকতা নিয়ে
বাতাস তালে ডিঙি নাচ জমে
আমাদের স্বাভাবিক দুঃখমালা
মুখ লুকিয়ে কিছু দূর দিয়ে হাঁটে

মধু বাজনায় ঠিক তখন শুরু হয়
একটি জীবনকে অভিবাদন




কবিতার জন্য

বালিশ মোড়া হাঁপানির সুরে
খাতায় শুধু অতিসরল রেখাবলি

চশমার ভায়া চোখে তেলছাপ
আঙুলের ভূগোল সহ চুম্বকীয় বিলাস

যত ডুবতে চাওয়া ততই বাঁচা
একটি শুখা দাগ কলমের নিব চিরে