আমার হাত মানুষের মতো নয়। আমার হাত পাঁচ হাত লম্বা। পতিতপাবন সেটা কী করে জেনেছে। আমি যেন ওর একটা ব্যবস্থা করি। আমি বললাম, এক কাজ করো পতিতপাবনদা, এখন নতুন কিছুর যুগ। একটু অন্যরকম হলেই মানুষ খাবে। তুমি এক কাজ করো—
পতিতপাবন বলল, কী কাজ করবো?
আমি বললাম, নতুন কিছু করতে হবে তোমায়।
—কী নতুন?
বললাম, কাজটা বলার আগে একটা ভূমিকা দরকার, সেটা হলো বিশ্বে নতুন কিছু না পারলে তুমি টিকবে না। মানে টিকবে, টিমটিম করে টিকবে। এরকম টিকে থাকার মানে হয় না। যদি পারো তো গন্ডার গুলি করো আর ভাণ্ডার লুট করে নাও। গন্ডার মারা একটু শক্ত জানো তো? দুই চোখের মাঝখানে গন্ডারকে গুলি করতে হয়।
—ওসব আমার দ্বারা হবে না। আমি গন্ডার ফন্ডার মারতে পারবো না।
—তোমায় গন্ডার মারতে হবে না। মনে মনে ভাববে আমি গন্ডার মেরেছি। ব্যস, তাহলেই হবে।
—তুই যে কী বলছিস, মাথায় ঢুকছে না।
—তুমি উলঙ্গ হতে পারবে? আমি তোমায় মহাপুরুষ বানাবো।
—তুই আমায় উলঙ্গ হতে বলছিস! আমি তোর দাদার মতো না?
—শুধু উলঙ্গ নয়, ওই অবস্থায় মাথায় বেতের ধামা নিয়ে রাজপথ দিয়ে হেঁটে যেতে হবে।
পতিতপাবন খুশি হলো না। বলল, কী যা তা বলছিস!
ধামাতে লিখে দাও—FOR THE NAKED PEOPLE!
—তুই কিন্তু ইয়ার্কি মারছিস সত্য।
—আমি বুঝিয়ে বললাম, ইয়ার্কি নয় পতিতপাবনদা। তোমার ভাবার মতো ক্ষমতা নেই তাই ভাবছো ইয়ার্কি। এটাই তোমার পক্ষে সহজ রাস্তা। তবে মাথার জিনিসটা যেন বেতের হয়। পিওর বেতের ধামা। একবার বেরোতে পারলে তুমি রাজা হয়ে যাবে।
—রাজা হয়ে যাবো!
—হ্যাঁ, দ্য নেকেড কিং।

পতিতপাবন আমাকে অগাধ বিশ্বাস করে। মাঝে মাঝে আমার কাছে আসে। আমি ওকে টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করি না, তবে পরামর্শ দিই। একবার পাঁচটা পাথর দিয়ে বলেছিলাম, এগুলো নিয়ে খালি গায়ে ধুতি পরে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে বসে থাকো। লোকে জিজ্ঞেস করলে তবেই বলবে, এগুলো নর্মদার নারায়ণ শিলা। তুমি এক ডুবে শিলা সংগ্রহ করেছ। কেউ নিতে চাইলে বলবে, নিত্যপূজা করার অভ্যাস থাকলে তবেই আপনি নিতে পারবেন, নচেৎ লাভ নেই। তার পরেও কেউ রাজি হলে দক্ষিণার বিনিময়ে তাকে দেবে। সেদিন ভালো লাভ হয়েছিল ওর। সেই পতিতপাবন বলল, বল দেখি শুনি।

বললাম তো, তুমি উলঙ্গ হয়ে মাথায় ধামা নিয়ে বেরিয়ে পড়ো। ভাবতে থাকো আমার কোনো দুঃখ নেই, কোনো কষ্টও নেই। আমি মানুষের জন্য পথে নেমেছি। দারিদ্র্য, অসহায়তার দ্বারা উলঙ্গ হয়ে আছে সে সব মানুষ। তুমি রাজপথ দিয়ে হাঁটছো। মানুষ তোমাকে দেখে মোটেই হাসছে না। দেখবে, তোমার ছবি নিচ্ছে খবরের কাগজওয়ালারা। তোমার বাইট চাইছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমি ছড়িয়ে পড়ছ। শহর জুড়ে হইচই। দেশ তোলপাড়। তুমি তখন আর এলেবেলে কেউ নও, তুমি তখন মহাপুরুষ পতিতপাবন।

সব শুনেটুনে পতিতপাবন বলল, নারে সত্য, আমার লজ্জা করবে।
বললাম, তুমি তো তবু পুরুষমানুষ। এর আগে কানাডা দেশের তিনজন রূপসী নারী উলঙ্গ হয়ে হেঁটেছিল। তাদের লজ্জা করেনি? তোমাকে লজ্জা জয় করতে হবে।

—আচ্ছা মাথায় ধামার কথা বললি কেন?
—কারণ ধামা কুলো এসব হলো শুদ্ধ এবং সম্পদের প্রতীক। এগুলো বেতের তৈরি। লক্ষ্মীর কুলোও বেতের তৈরি। তার মানে তুমি শুদ্ধ, পবিত্র। তুমি মহাপুরুষ।

পতিতপাবন শেষ কথাগুলো মন দিয়ে শুনল, তারপর বাড়তি আর কোনো কথা না বলে চলে গেল। এর তিনদিন পর খবর পেলাম পতিতপাবন ধামা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। রাজপথ ধরে হেঁটে চলেছে। খবরটা পেয়েই আমি ছুটলাম। দেখি সত্যিই পতিতপাবন উলঙ্গ হয়ে হাঁটছে, মাথায় ধামা। ধামার গায়ে লেখা—FOR THE NAKED PEOPLE—খালি পা। পাদুটো, মনে হচ্ছে পা নয়, মাটি দিয়ে তৈরি। আমি ডাকলাম, ও পতিতপাবনদা? পতিতপাবন গ্রাহ্য করল না। রোদ ফোদ কিছুই মানছে না লোকটা। মাথায় ছাতি থাকলে হতো। কিন্তু কে ধরবে ছাতি? হিউয়েন সাঙের ছবি দেখেছি পিঠ থেকে মাথা অবধি টোকা মতো কী একটা। চাইনিজ মালই হবে হয়তো। তারওপর নাকের সামনে কী একটা বাতি-মতো ঝুলছে।

আমার কথা ভাবার সঙ্গে সঙ্গে একটা মেয়ে এসে ছাতি ধরল। মনে হলো রাধিকা। তারপর মনে হলো রাধিকা নয়। যে-ই হোক বোধহয় ফিজিক্স নিয়ে এমএসসি করেছে। না হলে এত স্মার্ট হবে না। আমার ধারণা ছিল রাধিকাই একমাত্র স্মার্ট, কিন্তু না শহরে আরও অনেক মেয়ে আছে।

যাই হোক, আমি একটা দশ টাকার কয়েন ছুঁড়ে দিলাম ধামায়। তার সঙ্গে সঙ্গেই এক মাড়োয়ারি ভদ্রলোক গাড়ি থেকে নেমে একটা একশো টাকার নোট ধামায় রাখল। ইতিমধ্যে মেয়েটি ছাতা নিয়ে চলে গেল। পরক্ষণেই আর একজন ছাতা ধরলেন। ইনি পথচারি, বেকার যুবক হতে পারেন। ইনি কি পুণ্যের লোভে ছাতা ধরেছেন নাকি সামাজিক কর্তব্যের নিরিখে? হয়তো নিছকই উত্তরাধিকার কর্তব্য পালনের দায়িত্ব কাঁধে করেছেন।

আমি ডাকলাম, পতিতপাবনদা?
পতিতপাবন সাড়া দিল না।
কাছে গিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বললাম, পতিতপাবনদা আমি সত্যব্রত।
পতিতপাবন সন্তের মতো হাসল।
—যাবে কোথায়?
—সামনের দিকে।
—সামনে কোথায়?
—জানি না।
—কেমন লাগছে হাঁটতে?
—ভালো।
—কিছু খাবে?
পতিতপাবন হাঁ করল।

আমি এক প্যাকেট বিস্কুট আর জল নিয়ে এলাম। বিস্কুটগুলো একটা একটা করে খাওয়ালাম। তারপর বোতল খুলে জল মুখে ধরলাম।

এসব করার পর আমি পতিতপাবনের সঙ্গে এগোতে লাগলাম। দু-পাশে মানুষ। তাদের চোখে বিস্ময়। তাদের বিস্ময়টা বোধহয় ধামার জন্য। ধামাতে লেখা আছে—FOR THE NAKED PEOPLE—একজন পথচারিণী খুব দ্রুত এসে পতিতপাবনের পা ছুঁল। পতিতপাবনের কোনো বিকার নেই। উলঙ্গ হলে কি মানুষ পালটে যায়?

মাধবকাকার আশ্রমে এসে দেখি রাধিকা এসেছে। রাধিকা হলুদ রঙের শাড়ি পরেছে। রাধিকার হাতে ম্যাজিক-স্টিক। ওটা ছোঁয়ালেই মুহূর্তে সব বদলে যাবে। একটা অপার্থিব হাসি ছড়িয়ে আমার দিকে তাকাল।

বললাম, আপনার হাতে এইমাত্র যেটা দেখলাম কোথায় গেল?
—ম্যাজিক-স্টিক?
—হ্যাঁ?
—আচ্ছা আপনি কেন ভাবেন বলুন তো আমি ম্যাজিক-স্টিক নিয়ে ঘুরি?
বললাম, বিশ্বাস করুন এবারের দেখাটা কিন্তু একটুও মিথ্যা নয়।
—আপনার যতই মনে হোক, আমি একজন সাধারণ নারী ছাড়া কিছু নয়। আমাকে এভাবে ভাবলেই আপনার ইলিউশন কেটে যাবে।
—আচ্ছা চেষ্টা করবো।

রাধিকা বলল, শুনলাম একটি লোক উলঙ্গ হয়ে মাথায় ধামা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে? লোকটির নাম পতিতপাবন। কথাটা শুনেই আশ্রমে চলে এলাম। খুব ইন্টারেস্টিং। লোকটাকে নামালেন কীভাবে? রাধিকা জানে, এ কাজ আমার ছাড়া আর কারও নয়। আমিই লোকটাকে রাস্তায় নামিয়েছি। বললাম ওকে একটা শিক্ষা দিতে চেয়েছি মাত্র।
—কী শিক্ষা?
—আমার মোটা ধারণা দিয়ে মানুষের সমাজে একটা নিয়ম লক্ষ করেছি। যে লোক নিজের দুঃখ প্রকাশ করে হাত পাতে তাকে মানুষ ত্যাগ করে, আবার সেই লোকই অন্যের হয়ে যখন হাত পাতে তখন মানুষ সহজে গ্রহণ করে।
—বাঃ বেশ বললেন তো!
—এটা আমার কথা নয়, মাধবকাকার থেকে ধার করে বললাম। তাহলে বাকিটা শুনুন, মাধবকাকা বলেন, পৃথিবীর আদিকাল থেকে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ভাগ করার চেষ্টা তা হলো দুঃখ। সেই কারণেই দুঃখের কথা শুনতে মানুষের এত অনীহা। আর আশ্চর্য এই যে, পতিতপাবনকে দেখুন, ধামায় করে মানুষের দুঃখ বয়ে নিয়ে চলেছে।

রাধিকা কোনো প্রশ্ন করেনি। সবটা মন দিয়ে শোনার পর বলল, চলুন, পতিতপাবনের সন্ধান দিন। আমি তাকে অনুসরণ করবো।

আমি তাকালাম রাধিকার দিকে। রাধিকার হাতের ম্যাজিক-স্টিক ঝলসে উঠল। রাধিকা বলেছিল ওকে সাধারণ মানবী ভাবতে কিন্তু আমি পারি না। বারবার আমি প্রতারিত হই।
বললাম, চলুন।

আমরা রাজপথ দিয়ে হেঁটে চলেছি। এই পথেই পতিতপাবন হেঁটে গেছে। তার কোনো চিহ্ন নেই। অবশ্য পতিতপাবন যদি একদিন মহাপুরুষ হয়ে যায় তাহলে এই পথেই পায়ের ছাপ ফুটে উঠবে। কারণ মহাপুরুষদের পদচিহ্ন অদৃশ্য থাকে, সময়ে তা ফুটে ওঠে।

একটি বালক রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল। তার আদুর গা। প্যান্ট না থাকলেই বুঝি ভালো হতো এতই জীর্ণ আর ময়লা। সারা গায়ে ধুলো। মাথার চুল লাল।
রাধিকা বলল, দাঁড়ান।
আমি দাঁড়ালাম। রাধিকা বালকটির ছবি নিল আর বিনিময়ে দিল একটা পঞ্চাশ টাকার নোট। বালকটি টাকা পেয়েই ব্যস্ত হয়ে চলে যাচ্ছিল। বোধহয় ভয়ে, যদি কেউ কেড়ে নেয়। আমি ডাকলাম, শোন?
ভয়ে ভয়ে সে কাছে এল।
—কী নাম তোর?
—চাকতি।
—চাকতি! ভালো নাম নেই?
—বালক একই উত্তর দিল, চাকতি।
—বাড়ি কোথায়?
—ওই দিকে।
খালের পাশে আমি বস্তি দেখতে পেলাম।
—হ্যাঁ রে, কাল রাতে কী স্বপ্ন দেখেছিস?
—জানি না।
—কোনোদিন কোনো স্বপ্ন দেখিস নিই?
—একটা নতুন জামা পরে আছি, একদিন দেখেছি।

ছেলেটি চলে যেতে, রাধিকা বলল, ছেলেটিকে স্বপ্নের কথা জিজ্ঞেস করলেন কেন?
বললাম, আসলে ওদের ভেতরের মানচিত্রটা দেখতে চাইলাম।
রাধিকা বলল, চলুন আমরা এগোই, পতিতপাবনকে খুঁজে বার করি।
—চলুন।
আমরা হাঁটছি, রাধিকার সঙ্গে এরকম আগেও হেঁটেছি। ও পরিশ্রমী। হাঁটতে পারে খুব।
বললাম, একটি মেয়েকে দেখলাম, পতিতপাবনের মাথায় ছাতা ধরে হাঁটতে। প্রথমে মনে হয়েছিল আপনি, পরে বুঝলাম, না, আমার ভুল।
—মেয়েটি বাহাদুর।
—আমারও তাই মনে হয়েছে। বোধহয় ফিজিক্স নিয়ে পড়াশুনা করে।
—কেন, ফিজিক্স নিয়ে কেন?
—জানি না, তবে ধারণা ফিজিক্সে মেয়েদের স্মার্ট মনে হয়। যেমন আপনি।
—আপনি যেন মেয়েটির প্রশংসা না করে ফিজিক্সের প্রশংসা করছেন। মেয়েটির ঠিকানা জানা থাকলে ভালো হতো। আমাদের ভারত শিক্ষাশ্রমে সদস্য করে নেওয়া যেত।

এই সময় একজন কপালে হাত দিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিল। অভাবী গোছের মানুষ। হয়তো কিছু একটা কিনারা করতে না পেরে ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। অথবা নিছক ভবঘুরে। যাই হোক সে বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।
রাধিকা তার ফোন বার করতে গিয়েও করল না। প্রশ্ন করল, লোকটি কী ভাবছে মনে হয়?
বললাম, ধারণার কথা বলব?
—তাই বলুন।
—সামনে শীত আসছে। লোকটি তার সন্তানের কথা ভাবছে। একখানা গরমের উপকরণ চাই সন্তানের জন্য। একটা কানঢাকা টুপি আর হাত মোজা হলেও ভালো হয়।
—দিজ ইজ হিউম্যানিক। এরকম সবাই ভাবতে পারে না।
বললাম, পতিতপাবনের যাত্রাও হিউম্যানিক। মানুষের জন্য এমন ভ্রমণবৃত্তান্ত পৃথিবীতে বিরল। একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। চলুন, পতিতপাবনের খোঁজে আমরা যাচ্ছি।
রাধিকা বলল, তাকে আমরা পাবো কোথায়?
—আপাতত পাবো না।
—কেন পাবো না?
—সে কোথায় আছে আমাদের জানা নেই, তাই।
—তাহলে কি আমরা বৃথাই বেরোলাম?
—এর একটা যোগসূত্র নিশ্চয়ই আছে। হয়তো একদিন আবিষ্কার করে ফেলবো।

খবর পেলাম পতিতপাবন আসছে। মাধবকাকা ভারত শিক্ষাশ্রমের প্রবেশদ্বারে মালা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। রাধিকার হাতে থালা। থালায় চন্দন আর ফুল। গল্প লেখিকা সুমনা বউদি এসেছেন। এসেছে খ্যাপাদা, খ্যাপাদার ছেলে রতন। খবর পেয়ে এসেছেন শ্রীরামচন্দ্র। এরা সবাই ভারত শিক্ষাশ্রমের সঙ্গে যুক্ত। সদস্যরা ছাড়া বাড়তি আরও লোক রয়েছে অপেক্ষায়। উলঙ্গ ধামা মাথায় সেই লোকটাকে দেখবে।

পতিতপাবন এল তার ঘণ্টাখানেক পর। ওর সঙ্গে রয়েছে রাতুল। রাতুলও শিক্ষাশ্রমের সদস্য। রাতুল কোথা থেকে কীভাবে জুটল! তার চেয়েও আশ্চর্যের ব্যাপার পতিতপাবনের পরনে এখন খাটো ধুতি আর গায়ে সাদা উত্তরীয়। সারা শরীরে ধুলো। মনে হচ্ছে এক অপার্থিব জগৎ থেকে নেমে এসেছে। রাতুল দ্রুত এগিয়ে এসে বলল, পতিতপাবনদা আসছে।

বললাম, পতিতপাবনের গায়ের উত্তরীয় আর ধুতি কি তুমিই পরিয়েছ?
রাতুল বলল, আমি পরিয়েছি সত্যি, কিন্তু নির্দেশ ছিল মাধবকাকার। এখন পতিতপাবনের কাজ শেষ, শুরু হবে সামাজিক অনুষ্ঠান। সামাজিক অনুষ্ঠানে পোশাক আবৃত থাকাই শোভন।

হঠাৎ দেখলাম পতিতপাবনের ধামা থেকে একটা লাল জামা উঁকি দিচ্ছে। আমি রাধিকাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাধিকা রাস্তায় যে ছেলেটির ছবি তুলে পঞ্চাশ টাকা দিয়েছিলেন, সে একটা স্বপ্নের কথা বলেছিল মনে আছে?
—হ্যাঁ, একটা জামার স্বপ্ন দেখেছিল।
—জামাটা কি লাল বলেছিল?
—মনে করতে পারছি না। কিন্তু কেন?
—পতিতপাবনের ধামায় একটা লাল জামা উঁকি দিচ্ছে। দেখতে পাচ্ছেন?

রাধিকা ধামার দিকে তাকাল। তারপর আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, আপনার দিব্যদৃষ্টি আছে।
বললাম, আমার নয়, সেই ছেলেটির দিব্যদৃষ্টি আছে। রাধিকা বলল, আর ওই লোকটি যে ভাবছিল, একটা কানঢাকা টুপির কথা!
—ঠিকই ধরেছেন, ওটাও ধামার ভেতর পাবো। রাধিকা ওদের এবার খুঁজে বার করতে হবে। জিনিসগুলো পৌঁছে দেবেন। বলেছিলাম না, এর একটা যোগসূত্র আছে, হয়তো একদিন আবিষ্কার করে ফেলবো।

রাধিকার হাতের ম্যাজিক-স্টিক ঝলসে উঠেছে।