১.

একটি মুড়ি চটির নীচে চপলচ্যাপ্টা…বাক্যটা ভুল লিখেছি…একটি মুড়া চটির নীচে চপলচ্যাপ্টা হয়ে গেছে…এই শেষের হয়ে গেছে টুকু একান্ত নিজস্ব শেষের…অথবা শেষের একান্ত নিজের…মোবাইলে উবে এককি মেয়ে পাশের বাড়ির ছাদে ঢিল পাড়ে…অথবা একটি মেয়ে…এই সন্ধ্যায়…এই বিস্তীর্ণ নরককুণ্ডের পাশে বসে…ভাবি ফের ক্রিয়াতে মহামারির কৈফিয়ত দিতে হবে…ভুলের বেড়ালছানা টাং-এর ন্যাওটা…পথ থেকে বোল ফেরে নতুবা শামুক…একটা মুড়ি চটির নীচে চপলচ্যাপ্টা…বলো সোনা, কে কার ভুলের বিবাদী?


২.

জাহান্নম জাহান্নম…তিনবার বলব না…বিছানায় কেলিয়ে এদিকে ল্যাপটপ, ওদিকে বোতল…আকাশ দেখার শখ পেরিয়ে এসেছি…লিখতে গেলে আজকাল সাবধান হয়ে যাই…বাজে কথা লেখার নেই…যাবে না…মানহীন কলমচির মানে ওঠাবসা…এইভাবে স্থির…একইভাবে বহুদিন একই জায়গায়…মাথার যন্ত্রণার দীঘল বিস্তারে এঁটো ভাষা এঁটো কাঁটা এতোলবেতোল…

বহুদিন মানুষের সংস্রব নেই…বাহির ভিতরে এলে ভিতরই বাহির হয়ে পড়ে…মনে জমা পুঁজ রক্ত, ঘোরাঘুরি, মোরামের মরম রাস্তা…একই পায়ের চাপ সকাল বিকেল…অন্ধকার অন্ধকার…বলব না বাল তিনবার…


৩.

লিখা ট বড় সহজ কাম না…বৈলে দিলে বাবুরা বৈলবেক সহজ আবার বড় হয় ক্যামনে…সোজা পথে কয়লার খাদান, ই বখোত সাঁঝে ধুঁয়া ধুঁয়া…কোনটি কালো আর কোনটি ফসসা…ধুঁয়ার পাছুতে খানকি হিসাব লাইগি থাকে…কাঁচা কয়লা বিখে না…সাইকেলের তিনকোণা বুকে তার ডাগর মাই বাইন্ধে হিঁচা চোরে কয়লা টাইনে লিঞ্জায় বিহার রোডে…বাঙালির বুকের কালা সে রাস্তার দু-পাশ জালাইন্দেয়…বিহারি গ্যালা য্যান শুদ্ধ হঞে ইদিক টথে আসে…বড় জামাইকে বুঝায় ছনা মণ্ডল…ফুলের শুদ্ধি ন্যাতাইঞ্জাওয়ায়…যেমন তুমার ছাতের উপর হাগে শালিকের ছা…ডুবু সুরজের রঙে তার গায়েও রং লাগে…অন্ধকারে হাত দাও, বুইঝতে লারো…তেমনই কাঁচা কয়লা শালো…সাদা ধুঁয়ায় পাইকে ভুর…টালি হোক, পাকা ছাত হোক…এক গোছ কালি না মাড়ায় কুনো শালা ছাতে উইঠতে লারে…ঘর থেকে বার ট পৈর্যন্থ হওয়ার জো নাই…পা চালাও নতুন লিখা…জল হিঁচো আরও নতুন লিখা…ফসসা আর কালার মাঝে নিশান দেয়ালা…


৪.

অগত্যা লেখার পিছনে ছুট থামিয়ে খানিক ঠেকে যাই…শরীর এখনও দম পায় নাই…তবে দমবন্ধ‌ আকাশ…সে এখন নেমে আসে রাজবাড়ির পারে…দিঘিটার মাঝে ঘাই শহুরে যৌবন…ঢুকেই মনমতো একটি তরিবত…একদিকে লেডিস…অন্যদিকে জেন্টস…আঙিনা ভেঙেছে…অনেকটা দূরপাল্লার বাসের মতো ব্যাপার…হালকা হয়ে ঝাঁকাঝাঁকি গুরু…জোড়ায় জোড়ায় ফুল…না, শাসক দলের কথা বলছি না…অগলে ছন্দ বগলে থর্মোমিটার…এই দুইয়ের মাঝখানে বেঞ্চটেঞ্চ চেপ্টে একসা…এ বাজারে বকম্বল কেস খেতে খেতে আমি হেঁটে যাই…হালকা…কাজেই অসুবিধা নাই…


৫.

সে-ও অমাদেরই দিন, শেষ থেকে অবসন্ন শেষে, কাজলের ডাগর প্রহরে…এইভাবে ভাবতে ভাবতে…একটি সতর্কতা ওড়ে…ক্লান্তির ছায়া বাড়ে শতকের গায়…আমার মৃত্যু রোদ, যাবতীয় প্রতিশোধ ভগ্ন উরু পড়ে থাকে জলের তলায়…


৬.

দীর্ঘদিন অসুস্থ পড়ে আছি…লিখার সুবিধা নাই…আজকাল লিখতে পারি না…শেষের ভয়ে লিখি…অতির থেকে অতি, অতির থেকে অতি, অতির থেকে…ফালতু বকবক…পেঁয়াজ কাটলেটের দোকানে ঘোষ ডাকে…ওই দ্যাখ, দয়ালের ছেলে…দয়াল? আরে, বাপ শ্রীদয়ালের মালিক, আর ছেলের হাতে এক পো দুধ…চেয়ে দেখি আখেরেই তাই…এভাবেই চলে…পচার বাজারে গাঁধাইছে টাকার গা…হাঁটা অসুবিধা, বসাও…দেওয়ার যেটুকু ছিল ইলিশ ভেপেছি…আমার খাতার নীচে দীর্ঘ অবসাদ…প্রতিটি অক্ষর আয়নায় জ্বলজ্বল করে…দেউলিয়া…অবসন্ন…চালের ফিকিরে মানের ছোটাছুটি…ক্লান্তির পরে আর কিছু শেষের আশা ছাড়ি…কিচ্ছু লিখব না…প্রতিজ্ঞার মুখে আমৃত্যু রক্ত পেচ্ছাপ…এর মতো ওর মতো তার মতো…উপমা নিরোধী লোকে বারেবারে চোষাচুষি বেবাক করেছে…ক্রিয়াহীন বাক্ নীতি…বকেয়ার হিসাব কোথায়? এই তো জগৎ প্রিয়…কার ঠ্যাং কতখানি বড়…কতটা কামানো…

জীবনে ডায়রির থেকে অসৎ বালের কিছু নেই…ধরা যাক, দুর্গামন্দির অবধি পাঁচবার জাং চুলকাল…লিখলাম…এখনই মুড়ি না খেলে গ্যাস হবে…প্রেডিকশন…তাও লিখলাম…পাতা সেই খড়খড়ে…জীবনে জীবন নেই, ডায়েরিতে আছে? আর কত হ্যাজাবেন, দালাল-বিদায়ী কিছু নেই? আহা গো!

আমাদের অনেকখানি সন্ধ্যা স্টেশনে কাটা পড়েছে…মাখো মাখো ঝালমুড়ির দানা, তার মাঝে কাঁকর…যৌনতার চৌকাঠের সামনে ঘুরঘুর…এইসব নিয়েই গোয়াল…জমিদার, জোতদার, সাহুকার…এই হুংকার এককালে এসব গ্রামে যখন ছড়িয়ে পড়েছিল, তখনও বাউরি মেয়ে একা হেঁটে বাপের বাড়ি যেত, আজ তাদের যেতে অনেকখানি বাঁধে…কয়লার নীচের তাকে লক্ষ্মীর পুজো…ডিজের চোটে কান ছিঁড়ে ঝুলে আসে…আমি দেখি দুর্গামন্দিরের গোড়া জুড়ে ঈষৎ কাঁপুনি…কয়লার টাকায় দুরস্ত বিয়ামল…গাড়িগুড়ির চোটে মণ্ডপের জায়গা বেহাত হয়ে এলে সাঁওতাল কামলা লাগায় পাড়ার‌ মণ্ডল…মণ্ডপের চৌহদ্দি পাকে…কাঁটাকাটি বেড়া…সে পথেই বেফাঁস হেলানে সেলফি তোলে মাজিদের বেটি…নাগাবেটির জৈন প্রোফাইল মণ্ডপ পিছনে নিয়ে চকচক করে…তিওয়ারিদের আর সে ব়্যালা নাই, শুনলাম কায়স্থ ঘরে বিয়া দিতে রাজি…ছেলে মিলিটারি…তলে তলে বোতলে বোতলে সওদাও পাকা…ব্যাঙ্গালোর থেকে রাতের ওড়না খুশিমনে ছেলে বাড়ি আনে, বোকাচোদার অরণ্যে ছেলের বাপ পোস্টম্যান, ওড়না ফের ফিরিয়ে এসেছে, হবুউবু বেনাইবাড়িতে কাঁথাটাঁথা বোনে বেশ পুরু…গোঁজা যাক…এইসব গুঁজবের মাঝে গ্রাম পানি গাঁধায়, ধূসর…ক্রমে মলিনা, বিক্রমেও মলি না…মলম ঘষে ঘষে…ছিঁড়ে নেওয়া নাভির থেকে দূর…যেমন বিচ্ছিন্নতা স্বাস্থ্যের লক্ষণ…তেমনই দ্বীপের পারে বিশদে নির্লজ্জ ও একা একটি কুঠুরি গড়ে ওঠে…লোকচালানি কুঠি…মুখে মুখে মুখে…মরে যাব? ক্লিশেক্লিষ্ট তবু…দীর্ঘদিন অসুখের পরে আকাশের ডালা খোলে কেউ…খানিক ক্লিশের কথা মন দিয়ে শুনি…হয়তো এমনই কোনো রাতে কয়লাবৃষ্টি জমে বড়…ভিজে ভিজে বাদামি বিকেল…সাইকেলে চড়লেই বিষ, আঙুলেও বিবর্ণ ছাপ…বর্ষার পাশেই মামন…মনসার উৎসবে কখনও নীরব…কখনও কড়ক ভাসে, বাউরি বসালে হাইগবেক নাই? নোংরা এক ট জাত…বিয়ামল সুপারডিলাক্সের উলটো পিঠে দুগ্গামণ্ডপ, নাগাবেটির সেলফি তোলা এ সময়ও জারি, কোত্থেকে ওড়নাটুকু শুধু, অসুস্থ এ গলার দিকে আসে…এলোমেলো হামা, যেন হাঁটতে শেখেনি…অতি অতি কাছে, অতির পরে অতি, অতির পরে অতি, অতির পরে অতি…

শ্রান্ত বৃদ্ধা হেঁটে যান…ফ্ল্যাটের আবেশে বেদম গরম গলি…ওদলানো বুক আর বেহাল ছাতের কোণে নিখোঁজ গ্রানাইট…জোৎস্না ছেঁটানো…হালচাল ধীরে ধীরে নিথরের তলে…তোমার আমার কথা এইভাবে ভাবি…নরম আওয়াজ…আর সন্ধেবিলাসী গ্রাম…খোল পচা গন্ধের কামিনী গোড়ায়…বাগানে মেধার দিন খুলে রাখি বাক্যের গঠন ভঙ্গিমা…অথচ সত্যিই কি? এই লেখা আমাদের কাছাকাছি যাবে? সমান্তরাল আঁক…এক দুই…অযুত নিযুত…কেউ কারও কাছাকাছি নয়…প্রতিটি নেওয়ার সঙ্গে খানিক দূরত্বের খাদ মিশে থাকে…দরজায় সিলুয়েট মূর্তি…বহুদিন ধরে দেখি…অতর্কিতে…দেওয়ালের পাশে…বাল্ব দিলে আরও বেশি ভয় ভয় গায়ে…

লিখার সুবিধা নাই…বৃদ্ধার আড়ালে…ছায়াকথা কিছু বলি…উপায় থাকে না…দশকুড়ি ক্রিয়া নিয়ে কয়লা সাজানো চাতালে উঠিয়া যাব…উজবুক ধোঁয়া…অক্ষরে যদি কিছু চাল ধার দেয়…কিচ্ছুটি লিখব না…যাই মুতে আসি…




প্রচ্ছদচিত্র সৌজন্য: www.pinterest.com