[যশবিন্দর শর্মা (জন্ম ১৯৫৮ সালে হরিয়ানায়) ইংরাজি ভাষায় ছোটোগল্প লেখার পাশাপাশি হিন্দি, উর্দুতেও গল্প সংকলন রয়েছে তাঁর। তিনি ২০০৫ সালে হরিয়ানা সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। সাহারা কথা পুরস্কারেও সম্মানিত হন তিনি। ২০১০ সালে সাহিত্য আকাদেমির দ্বিমাসিক জার্নাল ‘ইন্ডিয়ান লিটারেচার’, মে-জুন সংখ্যায় এই গল্পটি (ইংরাজি ভাষায়) প্রকাশিত হয়েছিল।]

বঙ্গানুসরণ : বিপ্লব বিশ্বাস


আমার কাজটা ফলদায়ী বা রোমাঞ্চকর—কোনোটাই নয়। কার্যত এটা পেয়েছি উত্তরদায় হিসাবে। আমি কবির। পেট চালাতে কবর খুঁড়ি। আমার এ কাজ পরম লোভনীয়গুলির মধ্যে পড়ে না। মোটের ওপর আমার জন্য কাজের ‘ভালো দিন’ মানেই অন্যান্য যাদের প্রিয় আপনজন মারা গেছে তাদের কাছে হৃদয়বিদারক দিন।

আমার শহরে কেউ আমাকে যথেষ্ট সমীহ করে না, সম্মান দেয় না। শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দার কাছে আমার সামনাসামনি পড়া মানেই তা বিরক্তিকর ও অশুভ। রাস্তায় আমাকে দেখলেই তারা ভাবে, এই বুঝি কোনো ভয়ংকর বিয়োগের খবর দেব। এই শহরের মানুষের কাছে আমি দরকারি দুষ্ট লোক—যে কিনা বেহেশতের পথে তাদের শেষযাত্রার ব্যবস্থা করি। আমার কাজের জায়গা হলো রেজিমেন্ট বাজার ছাড়িয়ে উত্তরদিকের প্রান্তে ধুলোময় পরিত্যক্ত অভাগা কবরখানায়।

কবর খোঁড়ার এই পেশায় বংশপরম্পরায় নিযুক্ত ও ব্যস্ত থেকেছে আমার আত্মীয়স্বজনরা। আমাদের না ছিল চাষ জমি, না ছিল কোনো ব্যাবসা বা চাকরি। আমার আব্বা কখনো-কখনো বুক ফুলিয়ে বলত—এই কবর খোঁড়ার কাজ চিরসবুজ আর একচেটিয়া যেহেতু এ এমন এক পেশা যা কখনওই ‘মরে’ যাবে না।

আব্বা যখন তার আব্বার কাছ থেকে এই কাজের দায়িত্ব পায় আমি সবে তাকে টুকটাক হাতে হিল্লে দিতে লেগেছি। দশ বছর পর কঠোর খাটাখাটনিতে আব্বুর ইন্তাকাল হলে আমি পুরো সময়ের খনকের কাজে লেগে পড়লাম। বড়ো পরিবার চালাতে আব্বুকে আরও অনেক বাড়তি পরিশ্রমের কাজ করতে হতো।

আমার শহরের মধ্যে বা আশপাশে কেউ মারা গেলে তক্ষুনি আমার ডাক পড়ে। শহরের বাইরে থাকলে তাড়াতাড়ি আমাকে খুঁজে আনার জন্য লোক পাঠানো হয়। আমাকে অবশ্যই ঝটপট পৌঁছুতে হয় কেননা ছোট্ট আর নোংরা কবরখানায় ঠিক জায়গাটি খুঁজে পাওয়া বড্ড কঠিন আর সেটাই আমার উদ্‌বেগ, কর্তব্য আর দক্ষতার বিষয়। অন্য কেউ এই বিশেষ কাজটি করতে পারবে না। এমনকি আমি অসুস্থ হলেও কবরখানায় হাজির থেকে মুনিষদের বুঝিয়ে দিতে হয় কীভাবে সঠিক জায়গায় ঠিকঠাক মাপের গর্তটা খুঁড়তে হবে।

কারও মারা যাবার খবর কানে এলে আমি তক্ষুনি ছুটে যাই—সে ঝড়, বৃষ্টি, প্রচণ্ড রোদ যাই হোক না কেন। কবরখানায় ঢোকার মুখে চালাঘরে রাখা কোদাল, বেলচা সব খুঁজে নিয়ে বেরোই। তারপর সবচেয়ে পুরোনো কবরটা বেছে নিই কেননা জায়গা আর এলাকা খুবই ছোট্ট।

নতুন কবরের জন্য নতুন জায়গা আমাকেই ঠিক করতে হয় এবং তা আগে কোনো লাশের কবর দেবার তারিখের ওপর নির্ভর করে। সে ক্ষেত্রে অনুমান করে নিতে হয় যে পূর্বে কবরস্থ লাশটা হয়তো পুরো পচেধচে মাটি হয়ে গেছে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কবরস্থ লাশের হাড়গোড় চারদিকে ছড়িয়ে থাকে কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে মাটির নীচে ভয়ংকর দৃশ্য অপেক্ষায় থাকে—যখন দেখি লাশ খানিকটা পচেছে বা আদৌ পচেনি কেননা পচন রুখতে লাশের দেহে সুগন্ধি দ্রব্য মাখানো হয় বা কেমিক্যাল ইনজেকশন দেওয়া হয়। এটা করা হয় মৃতের দূরের আত্মীয়দের শেষ দেখার সুযোগ করে দেবার জন্য—যখন কবরস্থ করার কাজ কোনো না কোনো কারণে দেরি হয়।

লাশ পুরো না পচলে তাকে ফের কবরস্থ করে অন্য জায়গায় কবর খুঁড়তে হয়। লাশের সামান্যতম অংশ যদি থেকে যায় তবে সেই খাপছাড়া অংশগুলো আমি ওই কবরখানার ভেতরেই আগে গেঁড়ে দিই, পরে নতুন লাশের জন্য কবর খোঁড়াখুঁড়ি করি। যেহেতু উপসাগর-অঞ্চল থেকে আসা সুবাসিত লাশের সংখ্যা বাড়ছে, পুরো না-পচা লাশের সংখ্যাও বাড়ছে। এই ঘটনায় এয়ারটাইট কফিনের ভূমিকাও কম নয়।

সেইসব ভয়ানক দৃশ্য আর এই নোংরা মাটি ঘাঁটাঘাঁটিতে আমার অভ্যেস হয়ে গেছে। এই কাজে হাতে দস্তানা পরা আমার পছন্দ নয়। দস্তানা পরলে আঙুল চালানোয় অসুবিধে হয়। খুব ছোটো থেকে আমি এভাবেই কোদাল চালাতে অভ্যস্ত।

গভীর কবর খোঁড়ার এই চাকচিক্যহীন কাজের মজুরি মাত্র কয়েকশো টাকা। মৃতের নিকটজন সচ্ছল হলে কালেভদ্রে হাজার খানেকের বেশি জোটে। বিদ্রুপের ঢঙে বলতে হয়, এলাকায় মৃত্যু ঘনঘন ঘটলে তবেই আমার আয় বাড়ে। কখনো-কখনো আশপাশের এলাকায় কবর-খনক সহজে না মিললে আমার ডাক পড়ে।

যেদিন কবর খোঁড়ার কাজ থাকে না, আমি এটা ওটা করি। মজুরের কাজ করি, বিভিন্ন সুপার মার্কেটে অস্থায়ী অ্যাটেনড্যান্ট বা গার্ডের কাজ করি। ইম্পিরিয়াল জুতো কারখানায় যখন পাহারাদারির কাজে লাগলাম, অন্য কাজের তুলনায় সেখানে বেশ মজা পেতাম। কবর খোঁড়ার কাজ মনটাকে খানিক অসাড় আর হতাশ-ঢঙে আবেগী করে তোলে। অসময়ে কেউ চলে গেলে পরিচিতজনেরা চিৎকার করে কান্না জোড়ে যা দেখে আমারও অমন করতে মন যায়।

মৃত্যুর ব্যবসায় আজকাল বড়োসড়ো ধাক্কা লেগেছে। আল্লাহর নিদান ছাড়াও নানান ঘৃণ্য এজেন্ট মারণের ঠিকাদারি নিয়েছে। বিদ্রোহ, উগ্রবাদী আক্রমণ, গ্রেনেড হামলা, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে জঙ্গিদের বোমাবাজি, গুলি চালাচালি আর হেফাজতে মৃত্যু এতগুণ বেড়ে গেছে যে কখনো-কখনো আমাকে কবর খোঁড়ার জন্য অল্প সময়ের মধ্যে মজুর জোগাড় করে কাজ সামলাতে হয়। যদিও এই কাজের জন্য টাকাপয়সা ভালোই পাই তবুও বিনা দোষে বা ভুল কাজ করার জন্য এইসব সরল মানুষের মূল্যবান জীবন শেষ হয়ে যাওয়া আমাকে খুব ব্যথা দেয়। সবই কিন্তু ক্ষমতা দখলের লড়াই। রাজনীতি এখন সাম্প্রদায়িকতা কিংবা অপরাধপ্রবণতা দোষে দুষ্ট হয়ে গেছে।

উগ্রবাদী জেহাদে যখন এলাকা উত্তাল, মৃত্যু তখন রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়াল। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে এত বেশি লাশ কবর দিতে হচ্ছিল যে পুরোনো কবরের ওপরেই নতুন মাটি ফেলে নতুন নতুন কবর বানাতে হচ্ছিল।

আমি প্রচুর লাশ তুলেছি। দিনে কুড়িটা পর্যন্ত লাশের কবর দিতে হয়েছে। কবরখানার সর্বত্র লাশ উপচে উঠছে। উগ্রবাদী হিংসা এই উপত্যকায় হাজার হাজার নির্দোষ মানুষের জান কেড়ে নিয়েছে। আমার এই উপত্যকায় নিরীহ যুবকদের কে-ই বা খুব একটা বোঝে? সক্ষম যুবকের সংখ্যা দিনকে দিন কমে এসেছে। তাদের বেশিরভাগই হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছে আর অন্যান্য অনেকে পুলিশের সঙ্গে সাজানো এনকাউন্টারে মারা পড়েছে। বাহিনীর মনোবল বাড়াতেই পুলিশ এই পথ বেছে নেয়। এই কঠিন বাস্তবের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে যেহেতু আমি প্রথম দিককার এক নামকরা জঙ্গি কমান্ডার হামিদের হতভাগা বাপ। সে আমার একমাত্র ছেলে। একদিন হেঁটে বর্ডার পেরিয়ে পাকিস্তান যাবে বলে ঘর ছাড়ল আর পরের গ্রীষ্মেই বেকার যুবক হামিদ সেই সময়ের নামকরা জঙ্গি কমান্ডার বনে গেল—সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ যারা গড়ে তুলেছিল তাদের একজন হয়ে গেল।

এখানটায় তার কবর। আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। ঠিকই, আমার ছেলে জঙ্গি ছিল। কাজ-টাজ না পেয়ে হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছিল। তিন বছর পর সে শহিদ হয়ে গেল। তার কবরের গায়ে এ কথা খোদাই করে রেখেছি—‘আমার প্রিয় পুত্র হামিদের স্মৃতিতে, যে তার যৌবন আর বাপের বুড়ো বয়সকে ধ্বংস করে দিয়েছে’। তার কবরের ওপর একটি ছোট্ট সমাধি-ফলক বানিয়ে দিয়েছে রিফাত, যে বড়োলোকদের জন্য এই কাজ করে। যাদের কবরখানার দামি জমিটা কিনে সেখানে সমাধি ও মার্বেলের সমাধি-ফলক বসানোর ক্ষমতা আছে—সেই ফলকে খোদাই করে রাখে শোক- সন্তাপ আর ভালোবাসার গাথা।

গোরস্থানের ওপর স্মৃতি-ফলক নির্মাতা রিফাতের গল্পটাও বেশ অদ্ভুত আর ট্র্যাজিক। বছর দশেক আগে সে শ্রীনগর চলে যায়। উনিশ বছর বয়সের আগেই তার আব্বা মারা যায়। সাতজনের সংসার সামাল দিতে রিফাতের আম্মা সবজি-টবজি বেচতে থাকে। ও যখন কাজ খুঁজছিল হঠাৎ আমার সঙ্গে দেখা। তখন আমরা দুজনেই গ্র্যান্ড মল তৈরির সময় সেখানে মজুরের কাজ করছিলাম। পোক্ত কারিগরি ঢঙে সে মার্বেল পাথর কাটত। তারপর হঠাৎই নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায় কেননা স্থানীয় রাজনৈতিক দল লোকেদের জড়ো করে ঝামেলা পাকায়। এরা সেইসব চাষি যাদের কাছ থেকে কোম্পানি সস্তায় জমি কিনেছিল। এদের স্বার্থে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলল নেতারা।

কাজ থেকে বসে যাবার পর রিফাতকে বললাম, আমার সঙ্গে যেতে। সে আমার কথামতো আমাদের শহরে এল। আমার ছেলে হামিদ সবে কলেজের পড়া শেষ করে কাজ খুঁজছে। কিন্তু তখন সব জায়গায় অরাজকতা। কাজের জন্য হন্যে হয়ে গেল সে। একটা সরকারি চাকরির জন্য রাজনৈতিক নেতারা প্রচুর ঘুষ চাইল। তিন বছর ধরে এদিক-ওদিক ধাক্কা খেল কিন্তু যেহেতু তার কোনো সুপারিশ বা পয়সার জোর ছিল না, কোনো চাকরিই জুটল না তার। সে পুরো হতাশ হয়ে পড়ল। আর তারপরই অনিবার্য ঘটনাটা ঘটল। উগ্রবাদী তাত্ত্বিকরা তার কানে অনবরত বিষ ঢালতে লাগল। ব্রেনওয়াশ পুরো হলে সে বাড়ি থেকে পালাল। হামিদ নিজের পথ হারিয়ে খুন হয়ে গেল। রিফাত হলো আমার দ্বিতীয় বেটা। সে মার্বেল খোদাইয়ের কাজ করতে লাগল। এখানে তার কাজকাম ভালোই হচ্ছিল।

পাথরে খোদিত হবার জন্য প্রচুর মৃত্যু ঘটছিল। বেশিরভাগই তাজা যুবক সব। রোদপোড়া দিন আর বরফঢাকা রাত্রি সব যন্ত্রণাময় হয়ে উঠল। আল্লাহ্‌র এ হেন অভিশাপ দেখে রিফাত কখনো-কখনো হতাশ হয়ে পড়ত। আমাদের এই উপত্যকার বিশ বছরের জেহাদের এক ধর্মীয় ব্যাখ্যা তাকে দিতে চেষ্টা করি এই বলে, ‘এই দুই দশকে এখানে যা ঘটে চলেছে তার কারণ আমরা আমাদের বিবেকের চাদরটি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি। আল্লাহ্‌র শিক্ষা মেনে নিতে অস্বীকার করেছি।’

শুধু রিফাত নয়, আমার ভাই মকবুলও ইদানীং ভয় আর অস্বস্তিতে থাকে। পুলিশের টিকটিকি ভেবে ভুল করে জঙ্গিরা ওর জামাইকে গুলি করে মেরেছে। মকবুল শ্রীনগরে এক নামি ডাক্তারের হেল্পার হিসাবে কাজ করত। উগ্রবাদী আন্দোলন যখন চরমে সে এখানে নিজের শহরে পালিয়ে এসে আরএমপি হিসেবে কাজ করতে থাকে। কপাল ভালোই ছিল ওর। ১৯৯০ সালের একটি দিনে শহরের আড়াআড়ি জায়গায় সে এক জঙ্গির বুলেট-ঝাঁঝরা দেহের সামনে পড়ে গেল। সরকারি ডাক্তার ছুটিতে ছিলেন। পুলিশ মকবুলকে ময়নাতদন্ত করতে অনুরোধ করল। সেই ময়নাতদন্তের পর থেকে মনে হলো সে এক অনিঃশেষ যাত্রা শুরু করেছিল।

মকবুলের হৃদয় ছিল পাষাণ। সে পুলিশের ট্রাকে চেপেও লাশ কাটাছেঁড়া করেছে—এক সঙ্গে আট আটটা লাশের ছেঁড়া-ফাড়া। সে সব লাশের না ছিল হাত পা, না মুখ কিংবা সবই টুকরো টুকরো। এতে করে আস্তে আস্তে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে লাগল বিশেষ করে যখন তার জামাইকে জঙ্গিরা নির্দয়ভাবে ফালাফালা করে দিল। মকবুল এতটাই মিইয়ে গেল যে রাতে ঘুমোতে পারে না। দিনে দিনে তার মেজাজ খিঁচড়ে যেতে থাকল। ঘন ঘন ধূমপান করতে লাগল সে। কোনো ময়নাতদন্তের কাজ করার আগে কেমন অদ্ভুত পাগলামিতে পেয়ে বসত তাকে। সহকর্মীদের দেখে বন্য মানুষের মতো চিৎকার জুড়ত। কখনো-কখনো রাতের খাবার সময়েও তাকে ময়নাতদন্তের জন্য টেনে নিয়ে যাওয়া হতো, এমনকি রাতের বেখাপ্পা সময়েও।

এখন নতুন সব লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে কাশ্মিরের পরিস্থিতি বাঁক নিয়েছে। মকবুল এখন এখানকার নতুন বাস্তবতার কেস পাচ্ছে—নিরাপত্তা রক্ষীদের আত্মহত্যা, অথবা সাধারণ নাগরিকদের যারা জলে ডুবে, বিষ খেয়ে বা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছে এবং এতে করে এমন ঘটনা অত্যন্ত বেড়ে গেছে।

এই সুন্দর উপত্যকা যাকে নিয়ে কবিরা লিখেছিলেন, স্বর্গ যদি কোথাও থাকে, তা এইখানে—সেখানকার প্রতিটি শহর নগরে আমার, মকবুলের মতো শয়ে শয়ে হাজারে হাজারে বুক চাপড়ানো মানুষ। আমাদের কাছে এ এক জীবন্ত নরক যেখানে প্রতিটি রাতই ভয়ানক দুঃস্বপ্নময় আর প্রতিটি দিন দুঃসহ অভিজ্ঞতায় ভরা। রিফাতের বয়স কম, তাই সে আশাবাদী; সামনের সপ্তাহে আমার ‘প্রিয়তমা কন্যা’ সাকিনার সঙ্গে তার শাদি। আমার ঘরের আঙিনা যে আবার উৎসবের খুশিতে ভাসবে তা ভেবেই আমি সুখী। হামিদের জন্য আর বিলাপ করব না। আল্লাহ্‌ মহান। তাই হোক।